অনলাইন ডেস্ক: সাত বছরেও শেষ হয়নি রাজশাহী শিশু হাসপাতাল নির্মাণকাজ। প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫৯ শয্যার এই শিশু হাসপাতাল নির্মাণ কাজটির ২ বছর আগেই মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারের গাফলতির কারণে এখনো প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ করা যায়নি। এতে করে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের লাখ লাখ শিশুদের উন্নত চিকিৎসা সেবার লক্ষ্য নিয়ে সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেটি এখনো বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে রাজশাহীর অভিভাবকদের মাঝে।
অন্যদিকে নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঠিকাদার কাজ শেষ করতে না পারলে তাঁকে টেন্ডারের প্রাক্কলিত মূল্যের অংশ থেকে নিয়মমাফিক জরিমানাসহ নানা ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সেটি না করে উল্টো ঠিকাদারকেই ওই টেন্ডারেই বাড়তি সুবিধা দেওয়ার জন্য নানাভাবে পায়তারা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে নাম প্রকামে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানান, একজন ঠিকাদারকে ইচ্ছেমতো সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে গণপূর্ত বিভাগ রাজশাহী। যার কারণে কাজটি মেয়াদ শেষের ২ বছরেও শেষ করতে পারেনি আব্দুর রশিদ নামের ওই ঠিকাদার।
সূত্র মতে, ২০১৩ সালের দিকে রাজশাহীতে সরকারি শিশু হাসপাতাল নির্মাণকাজের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরপর ২০১৬ সালের দিকে রাজশাহী নগরীর বহরমপুর এলাকায় ১৫৯ শয্যার শিশু হাসপাতালের ভবন নির্মাণের কাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এ কাজটি পান হোসেন এন্টার প্রাইজের সত্তাধিকারী ঠিকাদার আব্দুর রশিদ। কিন্তু গত চার বছরেও তিনি ওই কাজটি শেষ করতে পারেননি। অথচ এরই মধ্যে কাজটির মেয়াদ দুই বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো কাজটির প্রায় অর্ধেকাংশ বাকি রয়েছে। ফলে রাজশাহী অঞ্চলের লাখ লাখ শিশুদের আধুনিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের অভিভাবকরা। এমনকি শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থাও করা যাচ্ছে না।
রাজশাহীর আসলাম উদ্দিন নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার শিশুর বয়স দুই বছর। গত কয়েকদিন আগে হঠাৎ তার জ্বর দেখা দেয় শরীরে। তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে ভর্তি নিতে অস্বীকার করে। পরে বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে আমার ছেলের চিকিৎসা করাতে হয়। কিন্তু ভাড়া বাড়িতে রাজশাহী শিশু হাসপাতাল থাকার পরেও পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় সেখানেও ভর্তি করা যায়নি। ফলে আমার শিশুর চিকিৎসাসেবা ব্যহত হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
এদিকে রাজশাহী শিশু হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক এবি সিদ্দিক জানান, ‘২০১২ সাল থেকে ভাড়া একটি বাসায় কোনো মতে চলছে রাজশাহী শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম। তবে সরকারি ভবনটি চালু হলে এ অঞ্চলের শিশুদের চিকিৎসার মাণ উন্নয়ন করা সম্ভব হত।
এদিকে ঠিকাদার আব্দুর রশিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গণপূর্ত বিভাগ কাজ বুঝিয়ে দিতেই দেরি করেছে। এ কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা যায়নি। তবে দ্রুত শেষ করা হবে।
হাসপাতালটির নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সেখানে পুরনো ভবন ভাঙতে কিছুটা দেরি হওয়া আমরা সাইট বুঝিয়ে দিতে পারনি সময়মতো। তবে একটু দেরিতে কা শুরু করলেও সেটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ করা যেত। এখনো প্রায় ২০ ভাগ কাজ বাকি আছে। তবে আশা করছি দ্রুতই শেষ হবে।
মতিহার বার্তা ডট কম: ৩০ অক্টোবর ২০২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.